ঢাকা , শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ , ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
উত্তরাঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ সংকুচিত হচ্ছে বিমানের আন্তর্জাতিক রুট অনির্দিষ্টকালের জন্য মেট্রোরেলের যাত্রীসেবা বন্ধের শঙ্কা আইজিপিকে অপসারণের দাবিতে এবার পুলিশ সদর দফতর ঘেরাও এক মাসে নতুন করে এসেছে আরও ২৭৩৮ রোহিঙ্গা শিগগিরই ফিরবেন তারেক রহমান সেদিন দেশ যেন কেঁপে ওঠে-ফখরুল সব সময় জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে হবে : নেতাকর্মীদের তারেক রহমান ভোটের পরে সরে যেতে চান রাষ্ট্রপতি জোট করলেও নিজ দলের প্রতীকেই ভোট-হাইকোর্টের রায় বিএনপি-জামায়াতের দূরত্ব বাড়ছে রাজনীতির স্বার্থে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন ৩ লাখ ছাড়ালো ভর্তির জন্য স্কুল পায়নি সাড়ে ৭ লাখ শিক্ষার্থী শূন্য থাকছে পৌনে ৯ লাখ আজ থেকে মাঠে নামছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অন্তর্বর্তী সরকারের ১৬ মাসে দুই হাজার আন্দোলন হয়েছে-প্রেস সচিব তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানালো জামায়াত তফসিল ঘোষণা করায় ইসিকে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট ১২ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযোদ্ধাদের ওয়ারিশের তথ্য সংরক্ষণে নতুন নির্দেশনা আইজিপি বাহারুল আলমকে বরখাস্ত ও গ্রেফতার চেয়ে হাইকোর্টে রিট খালেদা জিয়ার অসুস্থতায় হাসিনার উদ্বেগ প্রকাশ

উত্তরাঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ

  • আপলোড সময় : ১২-১২-২০২৫ ১২:২৬:৫৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১২-১২-২০২৫ ১২:২৬:৫৬ পূর্বাহ্ন
উত্তরাঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ
হিমেল হাওয়া, ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে কাবু উত্তরের জনপদ। রংপুর জেলাসহ বিভাগের আট জেলায় চলতি মৌসুমের প্রথম মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে দেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে দিন দিন নামছে তাপমাত্রার পারদ, জেঁকে বসেছে শীত। শীত বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্বাসতন্ত্রের রোগ, ডায়রিয়া ও অন্য কিছু রোগের প্রকোপ বাড়ছে। প্রতিদিন হাসপাতালে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এলাকাটিতে চলতি মৌসুমের প্রথম মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, টানা আট দিন ধরে তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে। সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৭৮ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, দেশের কোনো এলাকায় ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকলে অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ, ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি থাকলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি থাকলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ, আর ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। স্থানীয় লোকজন জানান, হেমন্তের শেষ দিকে উত্তরের এই এলাকায় প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে কুয়াশা নামে, যা পরদিন সকাল পর্যন্ত থাকে। সঙ্গে যুক্ত হয় হিমেল বাতাস। তবে গত বুধবার রাতের দিকে কুয়াশার তীব্রতা কমতে থাকে। হালকা কুয়াশার মধ্যে প্রবেশ করা উত্তরের ঝিরিঝিরি হিমেল বাতাস রাত থেকে সকাল পর্যন্ত কনকনে শীত তৈরি করেছে। এর আগে গত বুধবার দিনের ঝলমলে রোদে তেঁতুলিয়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছিল। গত বুধবারও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বৃহস্পতিবার তা কমে ৮-এর ঘরে নামে। আবহাওয়া অধিদফতরের মাপকাঠি অনুযায়ী, তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। সেই হিসাবে দেশের সর্ব উত্তরের এই জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরেই এই জনপদে সন্ধ্যার পর থেকে বাড়ছে কুয়াশার দাপট। সেইসঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় রাতভর অনুভূত হচ্ছে কনকনে শীত। পাশাপাশি ঠাকুরগাঁও জেলায় গতকাল বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। আগামী তিন-চার দিন জেলায় তাপমাত্রা আরও নিচে নেমে আসতে পারে বলে জানিয়েছে রংপুর আবহাওয়া অফিস। রংপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। পাশাপাশি ঠাকুরগাঁওয়ে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি, দিনাজপুরে ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি, রংপুরে ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি, নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি, নীলফামারীর ডিমলায় ১২ ডিগ্রি, লালমনিরহাটে ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি এবং গাইবান্ধায় ১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রংপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, সকাল ৭টার পর কিছু এলাকায় সূর্যের দেখা মিললেও বেশিরভাগ জেলায় মধ্যরাত থেকে বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়েছে। সেইসঙ্গে হিমেল বাতাসের সঙ্গে গত দুদিন ধরে সন্ধ্যার পর শীতের তীব্রতা বাড়ছে। এতে করে রাত যত গভীর হয় তাপমাত্রা ততই কমতে থাকে। তবে দিনের বেলায় বিশেষ করে সকাল ৯টার পর থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত রোদ দেখা গেলেও বিকাল ৫টার পর থেকে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। এটি আগামী দুই-তিন থাকতে পারে। ডিসেম্বরের শেষ ও জানুয়ারির শুরুর দিকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এদিকে, গত কয়েক দিনের কুয়াশা এবং তীব্র শীতে কাবু এই অঞ্চলের মানুষ। বিশেষ করে দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ ও শ্রমজীবীরা। অনেকে সকালে ঘর থেকে বের না হলেও কাজের সন্ধানে নিম্নবিত্তদের ছুটতে হচ্ছে ঠিকই। শীত উপেক্ষা করে কাজ করতে হয় তাদের। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলেও শীতবস্ত্র বিতরণের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন রংপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা। কয়েক দিনের মধ্যে শীতবস্ত্র আসতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। নগরের রিকশাচালক আলী হোসেন বলেন, কুয়াশার মধ্যে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। ১০ হাত দূরেও ভালো করে দেখা যায় না। ঠান্ডা বাতাসে নাক-চোখ দিয়ে পানি বের হচ্ছে। মাঝেমধ্যে অসুস্থ হতে হয়। ভ্যানচালক আলমগীর হোসেন বলেন, সকালে যে পরিমাণ কুয়াশা ছিল, মনে হচ্ছিল সারা দিন ঠান্ডায় থাকা যাবে না। কিন্তু এখন রোদ উঠেছে, এজন্য ঠান্ডা কিছুটা কম লাগছে। তবে সন্ধ্যা থেকে শীত বেশি শুরু হয়। রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিভাগের আট জেলায় শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বরাদ্দ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে চাহিদাপত্র দেওয়া হলেও এখনও বরাদ্দ আসেনি। শীত বাড়ায় জেলায় ভাইরাস জ্বর, নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। উত্তরাঞ্চলের অন্যতম চিকিৎসাকেন্দ্র রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন শত শত মানুষ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন। রংপুরের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শরীফুল ইসলাম বলেন, এবার আগাম শীতের তীব্রতা বেড়েছে। এজন্য শীতজনিত রোগে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছে। শিশু ও বৃদ্ধদের সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত গরম পোশাক পরিয়ে রাখতে হবে। ঠান্ডা যেন না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে অভিভাবকদের।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
উত্তরাঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ

উত্তরাঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ